গত পাঁচ বছরে প্রচারের দিক থেকে বিগত সরকারগুলিকে টেক্কা দিয়েছে মোদী সরকার। ঢাক ঢোল পিটিয়ে প্রচার করা হয়েছিল সংসদ আদর্শ গ্রাম যোজনা প্রকল্পেরও যাতে সাংসদরা গ্রাম দত্তক নেবেন। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবে ধুঁকছে খোদ নরেন্দ্র মোদীর দত্তক নেওয়া বারাণসী কেন্দ্রের অন্তর্গত দুই গ্রাম, জয়াপুর ও নাগেপুর।
জয়াপুর গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান নারায়ণ প্যাটেল জানিয়েছেন, গত নভেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরে গ্রামের রাস্তা পাকা করা, স্বচ্ছ ভারত অভিযানের আওতায় শৌচাগার নির্মাণ এবং সৌরশক্তি চালিত আলোর ব্যবস্থা করা হয় ঝড়ের গতিতে।
কিন্তু দুই বছরের মধ্যেই অবশ্য ঝাঁ-চকচকে সেই সমস্ত প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে। গ্রামের সব রাস্তাই প্রায় গর্তে বোঝাই হয়ে গিয়েছে, শৌচাগারগুলি ভেঙেচুরে এমন দশা হয়েছে যে ফের মাঠমুখো হচ্ছেন গ্রামবাসী, সৌরচালিত আলো কাজ না করায় ফের অন্ধকারে ডুবেছে জনপদ।
এতেই শেষ নয়, নির্বাচিত পঞ্চায়েত থাকা সত্ত্বেও আরএসএস-এর মদতে পঞ্চায়েত প্রধানের ক্ষমতা ছেঁটে ফেলার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ। গত অক্টোবর মাসে বহিরাগত আরএসএস নেতাদের চাপে নির্বাচনের বদলে লটারির মাধ্যমে পঞ্চায়েত প্রধান বেছে নেওয়া হয়।
সেই নিয়ম মানতে অস্বীকার করে পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন জমা দেন নারায়ণ প্যাটেল। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পরে তাঁকে ও তাঁর ছেলেকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে তিন সপ্তাহ জেল খাটানো হয় বলে অভিযোগ পঞ্চায়েত প্রধানের।
জয়াপুরের প্রতিবেশী নাগেপুর গ্রামের হালও ভয়ানক। মোদী দত্তক নেওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই নমো-ঘনিষ্ঠ গুজরাতের নবসারির সাংসদ সি আর পাটিল গ্রামীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেন পঞ্চায়েত প্রধান পারশনাথ রাজভর। তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রীর স্বচ্ছ ভারত অভিযানের অধীনে গ্রামে ৪৩৫টি শৌচাগার বানানোর নির্দেশ এলে গ্রাম পঞ্চায়েতকে টপকে বহিরাগত বিজেপি ঘনিষ্ঠ সংস্থার তৈরি ফাইবারের শৌচাগার বসানোর তোড়জোর করেন পাটিল। এই প্রকল্পে পঞ্চায়েত প্রধানের অনুমোদন আবশ্যিক। তাই নিজের আপত্তির কথা জানিয়ে দেন রাজভর।
রাজভরের দাবি, শৌচাগারের নামে শুধুমাত্র ফাইবারের নড়বড়ে দেওয়ালে ঘেরা ছাদহীন গর্ত দিয়ে কাজ হাসিল করার ফন্দি এঁটেছিল পাটিল। সেই পরিকল্পনা ভেস্তে দেওয়ার পর থেকেই পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে তাদের সংঘাত শুরু হয়, যার এখনও কোনও মীমাংসা হয়নি।
No comments:
Post a Comment