
অমিত শহ যতই নির্দেশ দিন না কেন, মুকুল রায়কে জায়গা ছাড়তে নারাজ দিলীপ ঘোষ কিংবা রাহুল সিনহার মতো বঙ্গ বিজেপির নেতারা। পার্টির সর্বভারতীয় সভাপতির নির্দেশের বিরুদ্ধে মুখে কোনও প্রতিবাদ না করলেও তলে তলে নাশকতার খেলা শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা।
মুকুল যাতে কোনওভাবেই সাফল্য না পান, তার জন্য ইতিমধ্যেই ঘুঁটি সাজাতে শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা। ফলে জেলায় গিয়ে যে কর্মসূচিই নিতে যাচ্ছেন মুকুল, তাতেই বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন। মুকুল গোষ্ঠীর সঙ্গে সরাসরি বিরোধ বেধে যাচ্ছে দিলীপ কিংবা রাহুলের গোষ্ঠী। যুযধান দুই গোষ্ঠীর মধ্যে কোন্দল চরমে উঠেছে।
লোকসভা নির্বাচনের আগে ঠিক বাংলার জেলায় জেলায় গোষ্ঠী কোন্দল ক্রমাগত বাড়তে থাকায় কপালের ভাঁজ চওড়া হচ্ছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের। অরবিন্দ মেনন ও কৈলাশ এই নিয়ে খুব ক্ষুব্ধ।
সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায় এই রকমই এক চূড়ান্ত গোষ্ঠী কোন্দলে ভন্ডুল হয়ে যায় মুকুলের সভা। সভা চলাকালীনই গোলমাল বেধে যায় মুকুল গোষ্ঠীর সঙ্গে দিলীপ ঘোষ গোষ্ঠীর। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুরনো জেলা সভাপতি রতন দত্তকে সরিয়ে নতুন জেলা সভাপতি করা হয়েছে অন্তরা ভট্টাচার্যকে।
বাম আমলে এই অন্তরা ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এবং জেলা সভাধিপতি। সিপিএম ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার পরে অন্তরা বিজেপিতে যোগ দেন। সবং উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তৃণমূলের কাছে পরাস্ত হন। অন্তরা মুকুল গোষ্ঠীর এবং রতন
দিলীপ গোষ্ঠীর। এছাড়াও একদা পাঁশকুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান এবং তৃণমূল নেতা আনিসুর রহমান এখন মুকুলের হাত ধরে বিজেপিতে। সম্প্রতি তিনি জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। দিলীপ গোষ্ঠীর নেতা বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি চঞ্চল চট্টোপাধ্যায়কেও পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনিও চরম মুকুল বিরোধী। এই পরিস্থিতিতে দলের অন্দরে সংঘাত ক্রমশই বাড়ছে।
এই পরিস্থিতি কেবল যে পশ্চিম মেদিনীপুরে তা নয়। বাঁকুড়া, বীরভূম, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদা এবং আলিপুরদুয়ারেও সংঘাত চরমে।
মুকুলের বিরুদ্ধে দিলীপ ও রাহুল গোষ্ঠীর অভিযোগ, মুকুল রায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে নেতা ও কর্মীদের এনে দলে সদস্যপদ দিচ্ছেন। তাঁরা বিজেপির সংষ্কৃতির সঙ্গে আদৌ পরিচিত নন। কিন্তু সংগঠনে তাঁরাই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছেন এবং পুরনোরা প্রান্তিক হয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের সবচেয়ে বড় অভিযোগ হল, মুকুল সংগঠনে সংখ্যালঘুদের বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন, যা বিজেপির নীতিবিরোধী।
No comments:
Post a Comment