এবার দিল্লি থেকেও বাঙালি তাড়ানোর ডাক বিজেপির।
বিজেপি শাসিত দিল্লি পুরনিগম দূষণের দোহাই দিয়ে আচমকা স্বর্ণশিল্পীদের ছোট ছোট দোকানগুলি ‘সিল’ করে দিয়েছে। বহু দোকানে নোটিস লটকে দেওয়া হয়েছে। ওই বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বাঙালিদের সেখান থেকে উঠে চলে যেতে বলা হচ্ছে।এমনকি বাঙালি স্বর্ণশিল্পী ও তাদের পরিবারকে সেখান থেকে না চলে গেলে প্রাণনাশ ও ধর্ষণের হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে।
কিছুদিন আগে দুই বাঙালি যুবককে বেধড়ক মারধর ও তাদের এক বান্ধবীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় নাম জড়ায় স্থানীয় বিজেপি যুব মোর্চার দুই নেতা আকাশ চৌবে ও অনন্ত শর্মার। আক্রান্তদের বয়ান অনুযায়ী, কিছুটা অপ্রত্যাশিত ও অপ্রাসঙ্গিকভাবেই সেই ঘটনার সময়ে অভিযুক্ত বিজেপির দুই যুব নেতা হঠাৎই কার্যত হুমকি দিয়ে ওই দুটি ছেলে ও মেয়েটিকে বলে ওঠে-"বাঙ্গালিও কো হাম ইধারসে উখারকে ফেকেঙ্গে(বাঙালিদের আমরা এখান থেকে উপড়ে ফেলে দেবো)। আগার আপনা জান বাচানা চাহাতে হো,তো চুপচাপ আপনে পরিবার কো লেকার ইধার সে চালা যাও(নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে চাইলে চুপচাপ পরিবার নিয়ে এখান থেকে চলে যাও)।"আক্রান্তদের অভিযোগ, পুলিশে জানিয়েও কোনো ফল হয়নি।"
কার্যত খোলা আকাশের নিচে এসে দাঁড়াতে হয়েছে লক্ষাধিক স্বর্ণশিল্পীকে।করোলবাগ–সহ গোটা দিল্লিতে লক্ষাধিক বাঙালি স্বর্ণকার রয়েছেন। এঁদের বেশিরভাগই পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা। অভিযোগ, গত কয়েক মাসে বিজেপি-শাসিত পুরনিগমের ফতোয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে শতাধিক দোকান।
স্থানীয় লোকেরা বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর করেছেন বিষয়টি। এরপরই মমতা চিঠি লিখেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। কেজরিওয়াল পুরো বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। এখন নিরুপায় হয়ে সুবিচারের আশায় দিন গুনছে দিল্লির লক্ষাধিক বাঙালি পরিবার।
প্রসঙ্গত কিছুদিন আগেই কর্ণাটক থেকে ১৩ হাজার বাঙালিকে তাড়ানোর ডাক দিয়েছিলেন সেখানকার বিজেপি বিধায়ক অরবিন্দ লিম্বাভালি। বারবার নানা জায়গা থেকে বিজেপির বাঙালি তাড়ানোর ডাক দেওয়াকে বাংলার বাঙালি ভালো চোখে নিচ্ছে না বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।
No comments:
Post a Comment